__temp__ __location__
`

“টিউলিপ মামলার শুনানির বিষয়ে কিছুই জানেন না; গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়েও তিনি অবগত নন।”

শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গত কয়েক মাসে যেসব অভিযোগ এনেছে, সেগুলোকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে দাবি করেছেন তার এক আইনজীবী।
রোববার এক বিবৃতিতে টিউলিপের আইনজীবী প্রতিষ্ঠান ‘স্টিফেনসন হারউড’ এর সিনিয়র পার্টনার পল থুয়েট দাবি করেন, অভিযোগের ব্যাপারে দুদকের পক্ষ থেকে টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি।


এর আগেও যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো টিউলিপ ও তার আইনজীবী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্প ও প্লট দুর্নীতিতে নামা আসার পর এসব অভিযোগের বিষয়ে দুদকের পক্ষ থেকে যোগাযোগ না করার দাবি করা হয়।

এসব মামলা এবং এ বিষয়ক খবরকে ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে হয়রানি’ করার অভিযোগ আনা হয় তাদের তরফে।
রোববার ঢাকায় পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের মামলায় ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে বাংলাদেশের একটি আদালত।
এ তালিকায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর নামও রয়েছে।

রাতে এ বিষয়ে পল থুয়েট তার বিবৃতিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার প্রসঙ্গও তোলেন।
তিনি বলেন, “আজ সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে, আমার মক্কেল টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

“দুর্নীতি দমন কমিশন কিংবা বাংলাদেশ সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষ টিউলিপের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমাকে তার পক্ষ থেকে নিচের বক্তব্য তুলে ধরার এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে।”

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “টিউলিপের বিরুদ্ধে গত কয়েক মাসে সংবাদমাধ্যমে দুদক নানা ধরনের অভিযোগ তুলেছে। এসব অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা এবং এসব অভিযোগ তার আইনজীবীরা লিখিতভাবে মোকাবিলা করেছেন।”

“টিউলিপের সঙ্গে দুদক কোনো যোগাযোগ করেনি কিংবা সরাসরি তার আইনজীবীদের কাছে অভিযোগ জানায়নি। টিউলিপ তার বিরুদ্ধে ঢাকায় করা মামলার শুনানির বিষয়ে কিছুই জানেন না। কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার বিষয়েও তিনি অবগত নন।”

পল থুয়েট বলেন, “স্পষ্ট করে বলতে গেলে টিউলিপের বিরুদ্ধে তোলা কোনো অভিযোগের ভিত্তি নেই। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ঢাকায় বেআইনিভাবে প্লট নেওয়ার অভিযোগেরও কোনো সত্যতা নেই।

“বাংলাদেশে তার কখনই কোনো প্লট ছিল না। নিজের পরিবার কিংবা অন্য কাউকে পাইয়ে দিতে প্লট বরাদ্দে তিনি কখনো কাউকে প্রভাবিতও করেননি।”
ওই আইনজীবী বলেন, “টিউলিপের বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম কিংবা অন্যান্য যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেগুলোর কোনোটির পক্ষেই দুদক প্রমাণ সরবরাহ করতে পারেনি। এটা আমাদের কাছে পরিষ্কার যে, রাজনৈতিক উদ্দেশে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলা হয়েছে।“
শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ এক ডেভেলপারের কাছ থেকে লন্ডনে ৭ লাখ পাউন্ড দামের একটি ফ্ল্যাট ‘উপহার’ পাওয়ার খবর নিয়ে সমালোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে ইস্তফা দেন টিউলিপ সিদ্দিক।

এর ছয় মাস আগে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট গণ আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকার পতন ঘটে। এর পরপর বাংলাদেশের প্রকল্পে শেখ হাসিনা ও তার ভাগ্নির দুর্নীতি জড়ানোর অভিযোগের মধ্যে ‘উপহারের’ ফ্ল্যাট নিয়ে ব্রিটিশ মিডিয়ায় তুমুল আলোচনা শুরু হয়।
৪২ বছর বয়সী টিউলিপ গত ২ এপ্রিল এক্স পোস্টে দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আনা দুদকের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’।
বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে ‘হয়রানিমূলক’ প্রচার চালানোরও অভিযোগ করেন তিনি।
টিউলিপ বলেন, “যুক্তরাজ্যে এজন্য একটি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। আইনের শাসন ও ন্যয় বিচারের একটি ঐতিহ্য রয়েছে। আনন্দের সঙ্গে আমি তাদের যুক্তিসঙ্গত যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দেব, কিন্তু কোনো নোংরা রাজনীতিতে টেনে নামানোর চেষ্টা হলেও তাতে জড়াব না।

“একই সঙ্গে একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের গর্বিত সদস্য হিসেবে আমার কাজের মর্যাদা নষ্ট করে তাদের এমন দুষ্টু হয়রানিমূলক কিছু করার সুযোগ দেব না।

শাহজাদা সংগ্রাম

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *